আধুনিক কবিতার ইতিহাসে বিষ্ণু দে’র অবদান আলোচনা কর।
বিষ্ণু দে
আধুনিক কবিদের মধ্যে দুর্বোধ্যতার অভিযোগে সর্বাপেক্ষা বেশী অভিযুক্ত যিনি, তাঁর নাম বিষ্ণু দে (১৯০৯-১৯৮১)। এলিয়ট যেমন বিশ্বাস করতেন— ‘‘Poetry is not a turning loose of emotion, but an escape from emotion,’’ বিষ্ণু দে-ও তেমনি কবিতায় কল্পনাবিলাস বা ভাববিলাসকে প্রশ্রয় দেননি কখনও, মনন ও পাণ্ডিত্যের শিল্পিত প্রকাশ হিসেবেই তিনি ব্যবহার করেছে তাঁর কবিতাকে। তাই সেই পাণ্ডিত্য ও মননের ভার তাঁর কবিতাকে করেছে সাধারণ পাঠকের কাছে দুরূহ এবং কবি হিসাবে বিষ্ণু দে হয়ে উঠেছেন আধুনিক কবিদের মধ্যে দুর্বোধ্যতম কবি।
বিষ্ণু দে আধুনিক কাব্যজগতে অক্তিবাদী কবি হিসেবে চিহ্নিত। যদিও রাবীন্দ্রিক অস্তিবাদ থেকে বিষ্ণু দের অস্তিবাদে মৌলিক পার্থক্য আছে। নীহারিকার অস্পষ্টতা থেকে যেমন জন্ম নেয় দীপ্যমান নক্ষত্র, তেমনি আধুনিক যুগের ক্লান্তি, জিজ্ঞাসা, নৈরাশ্য, সংশয় থেকেই কবিতায় তৈরি হয়েছে বিশ্বাসের ধ্রুবজগৎ। সমসাময়িক হলেও সুধীন্দ্রনাথের জীবনদর্শন থেকে বিষ্ণু দে-র দর্শন ভিন্ন মেরুবর্তী। আবার, অমিয় চক্রবর্তীর অস্তিবাদের থেকে বিষ্ণু দে-র অস্তিচেতনার প্রধান পার্থক্য সূচিত হয় তখন, যখন দেখি অমিয় চক্রবর্তীর মতো আত্মভাবনার কেন্দ্রে এই অস্তিচেতনার জন্ম হয় না; বিষ্ণু দে-র অস্তিচেতনা জাগ্রত হয় সচেতন সামাজিক সমবায়ের পথে।
উত্তর-তিরিশের কবিদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ কবি হিসেবে বিষ্ণু দে-র কাব্যরচনার সূত্রপাত বুদ্ধদেব-জীবনানন্দের সমকালে। বুদ্ধদেব বসুর ‘প্রগতি’ পত্রিকায় তিনি প্রচুর কবিতা লিখেছেন। শ্যামল রায় ছদ্মনামে ‘কল্লোল’ ও ‘মহাকাল’ পত্রিকাতেও তাঁর কবিতা প্রকাশিত হত। পরে তিনি সুধীন্দ্রনাথের ‘পরিচয়’ গোষ্ঠীতে যোগ দেন এবং এই সময়েই তিনি এলিয়টের দ্বারা অণুপ্রাণিত হন। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ঊর্বশী ও আর্টেমিস’ ১৯৩২-এ প্রকাশিত। তাঁর অন্যান্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল— ‘চোরাবালি’ (১৯৩৮), ‘পূর্বলেখ’ (১৯৪১), ‘সাত ভাই চম্পা’ (১৯৪৫), ‘সন্দীপের চর’ (১৯৪৭), ‘আবিষ্ট’ (১৯৫০), ‘নাম রেখেছি কোমল গান্ধার’ ১৯৫০), ‘আলেখ্য’ (১৯৫৮), ‘তুমি শুধু পঁচিশে বৈশাখ’ (১৯৬০), ‘স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ’ (১৯৬১), সেই অন্ধকার চাই’ (১৯৬৫), ‘সংবাদ মূলত কাব্য’ (১৯৬৬), ‘রুশতী পঞ্চাশতী’ (১৯৬৭), ‘ইতিহাসে ট্র্যাজিক উল্লাসে’ (১৯৬৯), ‘রবি-করোজ্জ্বল নিজ দেশে’ (১৯৭১), ‘ঈশস্য দিবা নিশা’ (১৯৭৪), ‘চিত্রূপ মত্ত পৃথিবীর’ (১৯৭৫), ‘উত্তরে থাকো মৌন’ (১৯৭৭), ‘আমার হৃদয়ে বাঁচো’ (১৯৮০) ইত্যাদি। অর্থাৎ সংখ্যাগত দিক থেকে তাঁর কাব্যগ্রন্থ ও কবিতার সংখ্যা সুপ্রচুর সন্দেহ নেই।
আধুনিক অন্যান্য কবিদের মতো বিষ্ণু দে-রও প্রধান সমস্যা রবীন্দ্রনাথকে অতিক্রম করার সমস্যা। তিনি বুঝেছিলেন বাংলা কাব্যের মুক্তি রবীন্দ্র অনুসরণে নেই। তাই অস্তিবাদ ও আনন্দ সন্ধানী কবি হলেও বিষ্ণু দে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থেই রাবীন্দ্রিক কাব্যাদর্শে ছেদ টেনেছেন-হেথা নাই সুশোভন রূপদক্ষ রবীন্দ্র ঠাকুর। বস্তুত বিষ্ণু দে রবীন্দ্র-বিরোধী ছিলেন না। রবীন্দ্রনাথের অক্ষম অনুসরণ ও পুনরাবৃত্তির সংক্রমণ থেকে তিনি বাংলা কবিতাকে মুক্তি দিতেই ভিন্ন পথের সন্ধান করেছেন। সাহিত্যের ভবিষ্যৎ প্রবন্ধে তিনি লিখেছেন— তাঁর (রবীন্দ্রনাথের) নক্ষত্রবিহারী প্রতিভা বাংলার রসালো মাটিতে মানুষ আমাদের প্রাত্যহিক ব্যস্তবতায় বিরাজমান থেকেও বহু ঊর্ধ্বে স্বয়ং সম্পূর্ণ। তাই রবীন্দ্রনাথের নক্ষত্রবিহারী প্রতিভাকে শ্রদ্ধা জানিয়েই আধুনিক যুগের উপযোগী এলিয়ট-পন্থা অনুসরণে সার্থকতা খুঁজেছেন। কিন্তু এলিয়টের ‘ওয়েষ্ট ল্যাণ্ড’-এর ধারণার মধ্যেও পরিবর্তনের সংকেত ছিল। পরে এলিয়টও ঐতিহ্যানুসরণের ধারাতেই জীবন সম্পর্কে গভীর প্রত্যয়ে উপনীত হয়েছেন। কিন্তু বামপন্থী আদর্শে বিশ্বাস স্থাপনের ফলে বিষ্ণু দে-র জীবন সম্পর্কিত দর্শন এলিয়টের দর্শনের থেকে পৃথক হয়ে যায়। যদিও একথা স্বীকার্য এলিয়টের তিনটি কাব্য লক্ষণকেই বিষ্ণু দে প্রথম জীবনে অনুসরণ করেছেন সেগুলি হল— ঐতিহ্যানুসরণ, বিশ্ববীক্ষা ও নিরাসক্তি। এই আদর্শ অনুসরণের কঠিন পরীক্ষায় প্রথম দিকে যথাযথ উত্তীর্ণ হতে না পারলেও পরে বিষ্ণু দে তার দুর্বলতা কাটিয়ে উঠেছিলেন।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধোত্তর পৃথিবীর বীভৎসতা বিষ্ণু দে-কে পীড়িত করেছে। মানুষেরই জান্তব প্রবৃত্তি যেভাবে মানবতাকে নিগ্রহ করেছে তা কবিকে অস্থির করে তুলেছিল। যুগোচিত সংশয়, ক্লান্তি, হতাশা ও জিজ্ঞাসায় গ্রস্ত কবি রবীন্দ্রনাথের আনন্দময় দর্শনকে স্বীকার করতে পারেননি। তাই তিনি প্রথম দিকের কবিতায় রবীন্দ্রনাথের কবিতা-পঙক্তিকে ব্যবহার করেছেন রাবীন্দ্রিক ভাবাবেশ ছিন্ন করার ব্যঙ্গ-কুঠার হিসাবেই। ‘উর্বশী ও আর্টেমিস’ থেকে ‘চোরাবালি’ পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথের সিদ্ধরসকে ভাঙার প্রয়াসে রবীন্দ্রনাথেরই উজ্জ্বল পঙ্ক্তি-ব্যবহারের দৃষ্টান্ত দেখা যাবে।
প্রথম পর্বের এই কবিতাগুলিতে যুগ-যন্ত্রণা ক্লিষ্ট কবি চিরন্তন আদর্শ ও মূল্যবোধ সম্পর্কে সংশয়ী। সমাজবদ্ধ মানুষের পারস্পরিক প্রীতি, প্রেম-ভালবাসা বা ঈশ্বর-বিশ্বাস— ইত্যাদির প্রতি তাঁর আস্থা তখন বিনষ্ট। তাই এলিয়টের মতো তাঁর কবিতাতেও উঠে আসে ‘চোরাবালি’, ‘ফণীমনসা’ ইত্যাদি প্রতীক। যেমন—
চোরাবালি ডাকি দূর-দিগন্তে
কোথায় পুরুষকার।
‘চোরাবালি’ কাব্যগ্রন্থের ‘ঘোড়সওয়ার’ কবিতাটি বিষ্ণু দে-র কবিমানসের এক প্রতিনিধি স্থানীয় কবিতা। চোরাবালির চিত্রকল্পে কবির ব্যক্তিগত শূন্যতাবোধ ও যুগগত অসহায়তা ব্যঞ্জিত। কিন্তু যুগগত যন্ত্রণা বিষ্ণু দে-কে কর্মহীন উদ্যোগহীন নৈরাশ্যের দিকে ঠেলে দেয় না। অস্তিবাদী কবি এই নৈরাজ্যময় বন্ধ্যাভূমি থেকে কামনার আবেগতপ্ত ভূমিতে উত্তরণের তীব্র আর্তি ব্যক্ত করেন, প্রবল এক ঘোড়সওয়ারকে আহ্বান করে—
চোরাবালি ডাকি দূর দিগন্তে
কোথায় পুরুষকার ?
হে প্রিয় আমার, প্রিয়তম মোর!
আয়োপজন কাঁপে কামনার ঘোর
অঙ্গে আমার দেবে না অঙ্গীকার?
‘ঘোড়সওয়ার’ কবিতাটির অর্থ বিভিন্ন জন বিভিন্নভাবে করেছেন। এদিক থেকে বিষ্ণু দের এই উল্লেখযোগ্য কবিতাটি বহু পঠিত ও বহু আলোচিত। এটি নিঃসন্দেহে রূপক কবিতা। বন্ধ্যা বা বন্দিনী কন্যা এবং অশ্বারোহী কন্যা এবং অশ্বারোহী এক রূপকথার নায়ককে নিয়ে গড়ে ওঠা এই কবিতার বিচিত্র ব্যাখ্যা হয়েছে। এটি নারী-পুরুষের মিলন-কামনার প্রেম কবিতা হিসাবে যেমন আলোচিত, তেমনি ভক্ত-ভগবানের সম্পর্কের কবিতা হিসেবেও গৃহীত। কিন্তু জনজাগরণের যোজনার ফলে কবিতাটিকে প্রেম কবিতা বা অধ্যাত্মকবিতা হিসেবে গ্রহণ করা কষ্টসাধ্য হয়। ঘোড়সওয়ার যেন তখন প্রতিভাত হয় জন-সমুদ্রের মাঝখানে জেগে ওঠা নেতৃত্বের প্রতীক হিসেবে। প্রতিকূল পরিবেশ থেকে, যুগগত বন্ধ্যাত্বকে মোচন করবেন সেই জননায়ক, যা জনজাগরণ ছাড়া অসম্ভব। এখানেই মার্কসবাদে দীক্ষিত কবির চেতনাটি ফ্রয়েড-ইয়ুং-এলিয়টের প্রভাব ছাড়িয়ে যেন স্বকীয় ঔজ্জ্বল্যে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
বিষ্ণু দে কবি; আরো মনে রাখতে হবে এই কবি মার্কসবাদী। ভারতীয় গণনাট্য সংঘ তখন নানা আন্দোলনের পটভূমিতে লোকসাহিত্যের পুনরুজ্জীবন ঘটাতে সচেষ্ট হয়েছিল। বিষ্ণু দে স্পেনীয় কবি লোরকার মতো সমকালীন তীব্র সংঘাতপূর্ণ ঘটনাগুলিকে লোককথা-বূপকথা প্রভৃতির চিত্রকল্পে প্রকাশ করেছেন। যন্ত্রণাবিদ্ধ মানুষকে উদ্ধারের জন্য মার্কসীয় তত্ত্বেই তিনি সম্ভাবনার বীজ অঙ্কুরিত হতে দেখেছেন। ‘ঘোড়সওয়ার’ কবিতার ‘জনসমুদ্রে জেগেছে জোয়ার’ জাতীয় ছবি আঁকা ছাড়াও কবি অন্যত্র লিখেছেন শ্রমজীবী মানুষের কর্মগীতি—
আমরা ভেনেছি ধান, আমরা ভেঙেছি গম
জোয়ার বজরা আর শষ্য অড়হর
আমরা তুলেছি পাট আমরা বুনেছি শাড়ি গড়েছি পাথর।
রোমান্টিকতাকে আঘাত করে তিনি চিনিয়ে দেন শ্রমজীবী মানুষের ভিন্নতর জীবনচর্যার বাস্তবতা—
বধু নেই, সে গিয়েছে আউষের বিলে,
বর নেই, বর কোথা জগদ্দলে মূনিষ মিছিলে।
এই শ্রমজীবী মানুষের হাতেই গড়ে ওঠে সভ্যতার ইমারত। যুগের বন্ধ্যাত্ব মোচন ঘটাতে পারে তাদেরই ঐক্যবদ্ধ সচেতন জাগরণে—
আমরা জনতা, জনসাধারণ, সাধারণ লোক,
চাষী ও মজুর, কবি শিল্পী শ্রষ্টা
রাত্রি আজ করে দিই দিন।
এই সমাজ-সচেতন অস্তিবাদী ধারণা থেকেই বিষ্ণু দে-র কাব্যবিষয়ের পালাবদল শুরু হয় ‘পূর্বলেখ’ কাব্যগ্রন্থ থেকে। তাই এই সময় থেকে রবীন্দ্রনাথের সদর্থক চেতনার প্রতি তাঁর আস্থা ফিরে আসে। এখানে ব্যঙ্গ নয়, শ্রদ্ধার সঙ্গেই উদ্ধৃত হয় রবীন্দ্রপঙ্ক্তি—
তবু কানে কানে শুনি
তিমির দুয়ার খোলো হে জ্যোতির্ময়।
সুধীন্দ্রনাথ অতীতে তৃপ্ত নন, ভবিষ্যতেও আস্থাহীন। বিষ্ণু দে অতীতের জন্য হাহাকার করেননি। বর্তমানের মূল্য তাঁর কাছে সর্বাধিক এবং তিনি মানুষের ক্রম-উন্নতির সম্ভাবনায় আস্থাশীল।
বিষ্ণু দে-র কবিতার বিশিষ্টতা ও দুরূহতার জন্য অবশ্যই উল্লেখ করতে হয় তাঁর পুরাণ উল্লেখ প্রবণতার। বিশ্ববীক্ষা ও ঐতিহ্যানুসরণের এলিয়ট-পন্থায় বিশ্বাসী বিষ্ণু দে দেশীয় ও বিদেশী পুরাণের প্রসঙ্গ বারবার এনেছেন তাঁর কবিতায়। তাঁর ঐহিত্যচেতনা বিশেষ দেশকালে বদ্ধ নয় বলেই বিশ্ব-পুরাণ অনায়াস ভঙ্গিতে উঠে আসে তাঁর কবিতায় এবং তারই ফলে সাধারণ পাঠকের কাছে তাঁর কবিতা হয়ে ওঠে দুর্বোধ্য। ট্রয়লাস, ক্রেসিডা, ওফেলিয়া, হেলেন, অথবা কাসান্দ্রা, এলসিনোর ইত্যাদির পাশেই উঠে আসে উর্বশী, নচিকেতা, চাঁদ বণিক, কৌরব, শর্মিষ্ঠা, যযাতি ইত্যাদি ভারতীয় প্রসঙ্গও।
কবির শেষ পর্বের কাব্যগ্রন্থ ‘স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ’। এখানে কবি অতীত ও ভবিষ্যতের সন্ধিস্থলে দাঁড়িয়ে বর্তমানের ফাকি এ যুগের কাছে দেখিয়ে দিতে চেয়েছেন। নাম কবিতায় এযুগের অবান্তর উন্মাদ-বিলাসী কৃত্রিম খেলাকে তিনি নরকের দুঃস্বপ্নের সঙ্গে তুলনা করেন—
এ নরকে
মনে হয় আশা নেই জীবনের ভাষা নেই,
যেখানে রয়েছি আজ সে কোনো গ্রামও নয়, শহরও তো নয়।
প্রান্তর পাহাড় নয়, নদী নয়, দুঃস্বপ্ন কেবল
কিন্তু শেষপর্যন্ত বিষ্ণু দে অস্তিবাদী, তাই এই বন্ধ্যা-মরুভূমির বুকে দাঁড়িয়েও তিনি বৃষ্টির প্রার্থনায় পরামর্শ দিয়েছেন আকাশে তাকাও। এসেছে বৃষ্টি, কপিল গঙ্গা ইত্যাদি চিত্রকল্প যা নতুন সরসতার, নবজীবনেরই দ্যোতনা নিয়ে আসে। আর তখনই তিনি দেখেন রবীন্দ্রনাথের পূর্ণাবয়ব। সেখানে তিনি পেয়ে যান—
একাধারে বাঁশি ও তূর্যের,
কুসুমে ও বর্জে তীব্র যার সদা ছন্দায়িত প্রাণ।
বিষ্ণু দে নাগরিক কবি, প্রেমের তীব্র আবেগ অনুভূতিও তাঁর ছন্দোবন্ধ ও শব্দবন্ধে অসাধারণ কাব্যরূপ নিয়েছে। তিনি যুগযন্ত্রণাকে অস্বীকার না করেও অস্তিবাদী এবং সেই অস্তিবাদের উৎস মার্কসবাদী চেতনা। তাই তিনি শেষাবধি সমবেত মানুষের সংগ্রামী ভূমিকার মধ্য দিয়ে যুগাস্তরের স্বপ্ন দেখেন। তবু তাঁর প্রথম ও প্রধান ত্রুটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত দুর্বোধ্যতা। তাই গণসংগ্রামের প্রতি তাঁর আস্থা কবিতায় উচ্চারিত হলেও গণসংগ্রামের সহায়ক শক্তি হিসেবে তাঁর কবিতা মানুষের কাছে পৌঁছায় না।
Leave a Reply