//
//

উপসর্গের সংজ্ঞা দাও। এর বিভিন্ন প্রকারভেদ উদাহরণসহ ব্যাখ্যা কর।

উপসর্গ

যে সমস্ত অব্যয় শব্দ ধাতুর সঙ্গে মিলিত হয়ে বা ধাতুকে অবলম্বন করে ঐ ধাতুর নানা অর্থের সৃষ্টি করে, তাদের উপসর্গ (Prepositional Prefixes) বলে।

উপসর্গের অর্থবাচকতা নেই, কিন্তু অর্থদ্যোতকতা আছে। তারা স্বয়ং কোন বিশেষ’ অর্থ প্রকাশ করে না; কিন্তু ধাতুযোগে বিশেষ বিশেষ স্থলে বিশেষ অর্থ প্রকাশ করে। এই গুণের জন্যে উপসর্গ কেবল প্রয়োজনীয় নয়, ভাষার পক্ষে অপরিহার্য। একটি মাত্র ধাতু ভিন্ন ভিন্ন উপসর্গযোগে ভিন্ন ভিন্ন শব্দ গঠন করে। উপসর্গ কথাটি ‘উপ-সৃজ ধাতু+ঘঞ’ থেকে গঠিত। তার অর্থ—“উপসৃষ্টি’।

সংস্কৃত ভাষায় কুড়িটি উপসর্গ আছে। সেগুলি হল— প্র, পরা, অপ, সম, নি, অব, অনু, নির, দুর, বি, অধি, সু, উৎ, পরি, প্রতি, অভি, অতি, অপি, উপ, আ। কিন্তু পাণিনির মতে, উপসর্গ কুড়ি নয়, দ্বাবিংশতি অর্থাৎ বাইশ। তিনি ‘নিস্’ ও ‘দু’— এই অতিরিক্ত দুটি উপসর্গকেও হিসেবের মধ্যে ধরেছেন।

সংস্কৃত উপসর্গ প্রধানতঃ ধাতুর পূর্বে প্রযুক্ত হয়। বাংলায়ও উপসর্গ কেবলমাত্র ধাতুর পূর্বে প্রযুক্ত হয়। রবীন্দ্রনাথও বলেন, উপসর্গ থাকে সামনে, প্রত্যয় থাকে পিছনে, নতুন শব্দ তৈরি করবার বেলায় তাদের নইলে চলে না।

সংস্কৃতে ধাতুর সঙ্গে ভিন্ন ভিন্ন উপসর্গযোগে কীভাবে ভিন্ন ভিন্ন শব্দ গঠিত হয় ও অর্থান্তর ঘটে, তার একটি দৃষ্টান্ত— “প্রহারাহার-সংহার-বিহার-পরিহারবৎ।” অর্থাৎ, ‘হৃ’ ধাতুর সঙ্গে ‘প্র’ উপসর্গ-যোগে ‘প্রহার’, ‘আ’ উপসর্গ-যোগে ‘আহার’, ‘সম’ ‘উপসর্গ-যোগে ‘সংহার’, ‘বি’ উপসর্গ-যোগে ‘বিহার এবং পরি’ উপসর্গ-যোগে, ‘পরিহার’ শব্দ গঠিত হয়। সংস্কৃত উপসর্গগুলি মূল ধাতুর পূর্বে বসে কীরূপে শব্দের অর্থ বদলে দেয়, তা কয়েকটি ধাতুর দ্বারা দেখানো হল:

সংস্কৃত ✓হৃ [হরণ করা] ধাতু: ✓হৃ+ঘঞ = হার [মালা, ভাগ]। 

আ-হৃ+ঘঞ = আহার [ভোজন]; বি-হৃ+ঘঞ = বিহার [ভ্রমণ]; প্র-হৃ+ঘঞ = প্রহার [আঘাত]; বি-অব-হৃ+ঘ = ব্যবহার [আচরণ]; অব-হৃ+ঘ = অবহার [বাট্টা]; অপবি-হৃ+ঘ =অপব্যবহার [ভুল প্রয়োগ]; সম-হৃ+ঘঞ = সংহার [হত্যা]; সম-আ-হৃ+ঘঞ =সমাহার [সমষ্টি]; পরি-হৃ+ঘ = পরিহার [পরিত্যাগ]; প্রতি-হৃ+ঘ = প্রতিহার [দৌবারিক]; বি-অতি-হৃ+ঘ = ব্যতিহার [বিনিময়]; নি-হৃ+ঘঞ = নিহার, নীহার [বরফ]; অধি-হৃ+ঘ = অধিহার (অতিরিক্ত মূল্য]; উৎ-হৃ+ঘ = উদ্ধার [মুক্তি]; উপ-হৃ+ঘঞ = উপহার [উপঢৌকন]; উপ-সম্-হৃ+ঘঞ = উপসংহার [পরিসমাপ্তি]।

সংস্কৃত ✓বদ (মূল অর্থ-বলা] ধাতু: ✓বদ+ঘঞ = বাদ [উক্তি, মত]।

প্রবদ্+ঘঞ = প্রবাদ [জনশ্রুতি]; অপবদ্ + ঘ = অপবাদ [নিন্দা]; সম-বদ+ঘঞ =সংবাদ [খবর]; অনুবদ + ঘ =অনুবাদ [ভাষান্তর); বি-বদ+ঘ = বিবাদ [ঝগড়া]; প্রতিবেদ+ঘঞ = প্রতিবাদ [বিরুদ্ধ উক্তি]।

সংস্কৃত ✓বহ (মূল অর্থ বহন করা] ধাতু: ✓বহ+ঘঞ = বাহ

[বহনকারী]। প্রবহ্+ঘঞ = প্রবাহ [স্রোত]; নিরবহ+ঘঞ = নির্বাহ [যাপন করা]। বিবহ+ঘঞ = বিবাহ [পরিণয়]; উৎবহ+ঘঞ = উদ্বাহ [পরিণয়]।

সংস্কৃত রুধ [মূল অর্থ—রোধ করা] ধাতু: রুধ+ঘঞ = রোধ [বাধা]; অব-রুধ+ঘঞ = অবরোধ [পরিবেষ্টন]; অনুরুধ+ ঘঞ = অনুরোধ [মিনতি]; নিরুধ+ঘঞ =নিরোধ [বাধা]; বি-রুধ+ঘঞ = বিরোধ [বিবাদ]: প্রতি-রুধ+ঘঞ = প্রতিরোধ [বাধাদান]; উপ-রুধ+ঘঞ = উপরোধ [অনুনয়]।

সংস্কৃত নী [মূল অর্থ—আনয়ন করা] ধাতু: নী+ঘঞ = নয় [নীতি]; প্র-নী+ঘঞ = প্রণয় [প্রীতি]; অনু-নী+ঘঞ =অনুনয় [মিনতি]; নির-নী+ঘঞ = নির্ণয় [নির্ধারণ]; বি-নী+ঘঞ = বিনয় [নম্রতা]; পরি-নী+ঘঞ=পরিণয় [বিবাহ]; অভি-নী+ঘঞ = অভিনয় [কৃত্রিম ভাব প্রকাশ]।

১. সংস্কৃত উপসর্গ

প্র— প্রশংসা, প্রগাঢ়, প্রগতি, প্রভূত, প্রহার, প্রকাশ, প্রখর, প্রসাদ, প্রচণ্ড, প্রলয়, প্রতাপ, প্রকট, প্রগভ, প্রচলন, প্রদাহ, প্রবল, প্রজ্ঞা, প্রকর্ষ, প্রস্তাব, প্রভাব, প্রচ্ছদ, প্রভব, প্রবঞ্চনা, প্রতারণা, প্রণয়, প্রণয়ন, প্রক্ষেপ, প্রমাদ, প্রবাহ, প্রণাম, প্রণতি। পরা—পরাক্রম, পরাজয়, পরাভব, পরাধীন, পরাজুখ, পরাকাষ্ঠা, পরাগ, পরামর্শ। অপ— অপমান, অপচয়, অপনোদন, অপপ্রয়োগ, অপবাদ, অপযশ, অপহরণ, অপকার, অপব্যয়, অপমৃত্যু, অপকর্য, অপরাধ, অপঘাত, অপগত, অপসৃত, অপরূপ, অপদেবতা। সম্— সম্ভাষণ, সম্মুখ, সম্মান, সম্ভার, সম্মিলন, সংবাদ, সঞ্চয়, সংঘাত, সংগ্রহ, সংকলন, সংকট, সংকীর্ণ, সন্তাপ, সঞ্চালন, সম্পত্তি, সন্তোষ, সংগীত, সংস্কার, সংগতি, সম্পাদন, সমাবর্তন, সম্পূর্ণ, সমাহার, সন্ধান, সম্পদ, সংসার, সম্ভোগ। নি— নিগ্রহ, নিকৃষ্ট, নিবৃত্তি, নিবাস, নিগম, নিশ্চল, নিবারণ, নিরোধ, নিকট, নিমজ্জন, নিরাময়, নিরাকরণ, নীরোগ, নিদর্শন, নিপাত, নিশ্চয়। অব—অবতরণ, অবচেতন, অবরোহণ, অবহেলা, অবজ্ঞা, অবরোধ, অবসর, অবকাশ, অবগুণ্ঠন, অবস্থা, অবতার, অবদান, অবমান, অবগত, অবনত, অবলম্বন, অবগাহন।  অনু— অনুজ, অনুতাপ, অনুমান, অনুপ, অনুচর, অনুশোচনা, অনুমোদন, অনুরূপ, অনুকরণ, অনুলিপি, অনুবর্তন, অন্বেষণ, অনুমান, অনুসার, অনুবাত, অনুপাত, অনুরাগ, অনুকার, অনুরোধ, অনুগ্রহ, অনুবাদ। নির— নির্ণয়, নির্দোষ, নির্গমন, নির্জন, নির্মল, নির্ভয়, নির্ভর, নির্ধন, নির্যাস, নিঃসম্বল, নিঃসঙ্কোচ, নিরপরাধ, নিরন্তর, নিরভিমান, নিরতিশয়। দুর— দুর্গতি, দুর্জয়, দুর্ভাগ্য, দুরদৃষ্ট, দুর্লভ, দুর্জন, দুরাশা, দুর্ভিক্ষ, দুদিন, দুর্ব্যবহার, দুরন্ত, দুর্দম, দুর্মদ, দুর্ঘটনা, দুর্বিপাক, দুরারোগ্য। বি— বিজ্ঞান, বিকার, বিরাগ, বিজয়, বিচার, বিরোধ, বিবাদ, বিষাদ, বিক্রয়, বিসর্জন, বিয়োগ, বিজন, বিনয়, বিষম, বিস্মৃত, বিখ্যাত, বিতৃষ্ণা। অধি—অধিবেশন, অধিত্যকা, অধিরোহণ, অধিকার, অধিবাসী, অধ্যয়ন, অধ্যবসায়, অধিপতি, অধীশ্বর, অধিগত, অধ্যাত্ম, অধ্যাস, অধিষ্ঠান, অধিনায়ক। সু—সুদর্শন, সুন্দর, সুশ্রী, সুকোমল, সুদৃশ্য, সুকর, সুকণ্ঠ, সুনীতি, সুবাস, সুদিন, সুজলা, সুফলা, সুনাম, সুগম, সুতীক্ষ্ণ, সুস্থ, সুভা, সুভাষ, সুভাষিত, স্বস্তি [=সু+অস্তি], সুকৃতি, সুলভ, সুষমা, সুকুমার, সুগন্ধ, সুচিন্তিত, সুদূর, সুহৃদ, সুশান্ত, সুজন। উৎ— উৎসর্গ, উৎকৰ্ণ, উৎপত্তি, উত্তপ্ত, উন্মুখ, উদগ্রীব, উন্মন, উৎসাহ, উৎপাটন, উত্তাল, উচ্ছল, উচ্ছ্বাস, উত্থান, উচ্ছঙ্খল, উদ্বেগ, উদ্ধার, উৎকর্ষ, উদ্দীপনা, উৎকোচ, উৎক্ষেপণ, উদ্ভিদ, উত্থাপন, উৎকীর্ণ, উৎসারণ, উত্তর, উজ্জ্বল, উত্তম, উদ্বাস্তু, উৎখাত, উদাহরণ, উচ্চারণ। পরি— পরিখা, পরিতাপ, পরিপন্থী, পরিষ্কার, পরিত্যাগ, পরিহার, পরীক্ষা, পরিশ্রম, পরিণয়, পরিণাম, পরিক্রমা, পরিধান, পরিহাস, পরিণত, পরিচয়, পরিপূর্ণ, পরিপাক, পরিবর্তন, পরিচালক, পরিচালনা, পরিচ্ছদ, পরিচ্ছেদ, পরিচর্যা। প্রতি—প্রতিমূর্তি, প্রতিকূল, প্রতিকার, প্রতিনিধি, প্রতিকৃতি, প্রতিধ্বনি, প্রতিষ্ঠা, প্রতিক্রিয়া, প্রতিফলন, প্রতিহিংসা, প্রতিশোধ, প্রতিবাদ, প্রত্যহ, প্রতীতি, প্রত্যাশা, প্রত্যুত্তর, প্রত্যাখ্যান, প্রত্যর্পণ, প্রত্যয়ন, প্রতিবিধান, প্রতিফলন, প্রতিশ্রুতি, প্রতীক্ষা, প্রতিবেশী, প্রতিপক্ষ। অভি— অভিধান, অভিজ্ঞান, অভিরাম, অভিনয়, অভীষ্ট, অভীপ্সা, অভিভাষণ, অভ্যুদয়, অভিমুখ, অভ্যুত্থান, অভিযোগ, অভিসার, অভিশাপ, অভিনয়, অভিমান, অভিজাত, অভিলাষ। অতি— অতিকায়, অত্যন্ত, অত্যুক্তি, অতিশয়, অতিক্রম, অত্যধিক, অতীব, অতিরেক, অতিবুদ্ধি, অতিপ্রাকৃত, অতিমানব, অত্যুগ্র, অত্যল্প, অত্যুষ্ণ, অত্যাশ্চর্য, অত্যাবশ্যক, অত্যুজ্জ্বল, অত্যুৎকৃষ্ট, অতিরঞ্জন, অত্যাচার, অতিরিক্ত, অতিবৃষ্টি। অপি— অপিনিহিতি, অপিধান। উপ— উপহার, উপকার, উপচার, উপবাস, উপবন, উপকণ্ঠ, উপায়, উপাসনা, উপস্থিতি, উপবেশন, উপনয়ন, উপকূল, উপকথা, উপক্রম, উপনদী, উপসাগর, উপত্যকা, উপগ্রহ, উপজাত, উপদ্রব, উপনগর, উপনিবেশ, উপদেশ, উপনিষদ। — আহার, আহরণ, আচরণ, আস্ফালন, আচ্ছাদন, আরক্ত, আজন্ম, আশ্লেষ, আক্রমণ, আগমন, আবেশ, আদেশ, আরম্ভ, আদান, আদর্শ, আকণ্ঠ, আবাস, আবাহন, আভাস, আকুল। নিস্— নিস্তার, নিষ্কৃতি, নিষ্কাশন, নিস্তেজ, নিস্তাপ, নিস্পাপ, নিষ্প্রদীপ, নিষ্ফল, নিষ্কলুষ, নিষ্কলঙ্ক, নিষ্কণ্টক, নিশ্চল, নিঃশ্বাস, নিঃস্ব। দুস্—দুস্তর, দুষ্কৃতি, দুষ্পবৃত্তি, দুশ্চরিত্র, দুশ্ছেদ্য, দুঃসাধ্য, দুঃসহ, দুঃশাসন, দুঃস্বপ্ন, দুশ্চিন্তা, দুঃসময়।

২. উপসর্গরূপে সংস্কৃত অব্যয়

কতকগুলি সংস্কৃত অব্যয় বিশেষ কয়েকটি ধাতুর পূর্বে উপসর্গরূপে ব্যবহৃত হয়। যেমন: অন্তঃ— অন্তঃপুর, অন্তঃসলিলা, অন্তঃকরণ, অন্তঃসার, অন্তঃস্থ, অন্তরঙ্গ, অন্তর্ভুক্ত, অন্তর্ভুত, অন্তর্গত, অন্তর্জলী, অন্তর্ধান, অন্তর্বর্তী, অন্তর্ঘাত, অন্তর্দশা, অন্তর্দেশীয়। আবিঃ— আবির্ভাব, আবিষ্কার। পুরঃ—পুরস্কার, পুরোহিত, পুরোবর্তী, পুরোভাগ, পুরোধা, পুরোগমন, তিরস্‌—তিরস্কার, তিরোভাব, তিরোধান। পূর্ব— পূর্বরাগ, পূর্ববর্তী, পূর্বতন, পূর্বাহু, পূর্বাভাস, পূর্বাশা, পূর্বোক্ত, পূর্বপুরুষ, পূর্বজ্ঞান, পূর্বাচল। প্রাদুঃ— প্রাদুর্ভাব। বহিঃ—বহিঃস্থ, বহির্গমন, বহিরাগত, বহিবঙ্গ, বহির্ভূত, বহিষ্কার, বহিরঙ্গ, বহির্ভারত, বহির্জগৎ, বহিরাবরণ, বহির্ভাগ, বহির্বাণিজ্য। সাক্ষাৎ— সাক্ষাৎকার, সাক্ষাদ্দর্শন। অল— অলংকার, অলংকরণ। নঞ [‘অ’ ও ‘ন]— অকথ্য [ যা বলার যোগ্য নয়], অব্যক্ত (যা বলা হয়নি), নগণ্য (যা গণনার যোগ্য নয়], অগণ্য [যা গণনা করা যায় না], নগ (যা গমন করতে পারে না]।

৩. বাংলা উপসর্গ

বাংলা ভাষারও কতকগুলি নিজস্ব উপসর্গ আছে। এরা নামপদের পূর্বে বসে এবং শব্দের অর্থের পরিবর্তন ঘটায়। — অফুরন্ত, অদেখা, অসুবিধা, অবাঙালি, অবোলা, অকাজ, অযাত্রা, অভাগা, অবিবেকী, অপাত্র, অযথা, অনড়, অসুখ, অপয়া, অবেলা, অজানা, অচেনা, অকেজো, অনামী। অনা— অনাবৃষ্টি, অনামুখো, অনাসৃষ্টি। — আদেখলা, আলুনি, আভাঙা, আকাটা, আবোয়া, আসিদ্ধ, আভাজা, আকাট, আঘাটা, আকাল, আগাছা, আপাকা, আকাঁড়া। দর—দরকাঁচা, দরসিদ্ধ, দরপাকা। নি— নিলাজ, নিখরচা, নিখাদ, নির্জলা, নির্ভেজাল, নির্ভরসা, নির্ভাজ, নিটোল, নিখুঁত। পাতি— পাতিলেবু, পাতিহাঁস, পাতিকাক, পাতকুয়া। বি— বিভূঁই, বিদেশী, বিজোড়, বিকল, বিপথ। ভর— ভরদিন, ভরসন্ধ্যা, ভরদুপুর, ভরপেট। ভরা— ভরাঘট, ভরাসাঁঝ, ভরাগাঙ, ভরাদিন, ভরাডুবি, ভরাযৌবন, ভরানদী। রাম— রামদা, রামছাগল, রামগরুড়, রামশিঙে, রামশালিক, রাম-ধোলাই। — সপাট, সজোর, সজল, সটান, সঠিক, সখেদ, সকাতর, সক্ষম, সবুট। হা— হাভাতে (যার ভাতের অভাব), হাঘরে, হাপিত্যেশ, হা-হুতাশ।

৪. বিদেশী উপসর্গ

ফি— ফিদিন, ফিবছর, ফিসন, ফিবার, ফিরোজ। হর— হরবোলা, হররোজ, হরদিন, হরঘড়ি, হরসাল। গর— গরমিল, গরহজম, গররাজি, গরহাজির। হেড্—হেড‌-মিস্ত্রী, হেড‌-চাপরাশী, হেড্-পণ্ডিত, হেড্-অফিস। না—নাচার, নাখেরাজ, নাবালক, নামঞ্জুর, নারাজ [যে রাজি নয়], নাছোড়বান্দা, নাকাল। —বকলম, বনাম, বমাল। বে—বেবন্দোবস্ত, বেয়াদপি, বেকসুর, বে-টাইম, বেরসিক, বে-আইনী, বেইজ্জত, বেপরোয়া, বেচাল, বেহায়া, বে-হেড, বেসরম, বেতাল, বেজাত, বেহাত, বেঢপ, বেসুরো, বেতার, বেসামাল, বেহদ্দ, বেনামী, বেতার, বেহুশ। বদ্‌—বদ্‌মাইস, বদ্‌রাগী, বজ্জাত, বদ্‌মেজাজী (যার মেজাজ ভালো নয়]। ফুল [Full]—ফুলবাবু, ফুলহাতা, ফুলটিকিট, ফুলশার্ট, ফুলপ্যান্ট, ফুলটাইম। হাফ্ [Half]—হাফ‌্-টিকিট, হাফ‌‌-হাতা, হাফ্-টাইম, হাফ্-আখড়াই। সব্ [Sub]—সব্-ডেপুটি, সব্‌-জজ, সব-রেজিস্ট্রার, সব-অফিস। নিম্—নিমরাজী, নিমমুখ, নিম-হাকিম, নিম-মোল্লা। কার—কারবার, কারখানা, কারসাজি, কারচুপি, কারদানি। খাস—খাসমহল, খাসকামরা। খোশ—খোশগল্প, খোশমেজাজ, খোশগন্ধ, খোশবাবু।

*বিদেশী উপসর্গগুলির উৎস

ফি = আরবি, হর = ফারসি, গর = আরবি, হেড = ইংরেজি, না = ফারসি, = ঐ, বে = ঐ, বদ্ = ঐ,  ফুল = ইংরেজি, হাফ = ঐ, সব = ঐ, নিম = ফারসি, কা = ঐ, খাস = আরবি, খোশ = ফারসি।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!