চেতনাপ্রবাহমূলক উপন্যাস কী? এই শ্রেণির একটি উপন্যাস ব্যাখ্যা কর।
চেতনাপ্রবাহমূলক উপন্যাস
চেতনাপ্রবাহ বা ইংরেজিতে যাকে বলা হয় Stream of consciousness, সেটি অবলম্বন করে লেখা উপন্যাসকে একটি বিশেষ শ্রেণীর উপন্যাস বলা হবে, না একটি বিশেষ রীতির উপন্যাস এ বিষয়ে সন্দেহ থাকতেই পারে। কারণ এই আন্দোলনটি দানা বেঁধে ওঠে বাস্তবতাবাদী সাহিত্যিকদের রচনারীতি বা রচনা-প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে, কিন্তু যারা লিখছেন তারাও একে বাস্তবতাবাদী উপন্যাস বলতে চেয়েছেন, অন্য কোন ধরনের উপন্যাস নয়। ফলে একে বিশেষ এক ধরনের উপস্থাপন-কৌশল বা রচনারীতি মনে করাই সম্ভবত অধিকতর সংগত হবে।
The Stream of Consciousness কথাটা প্রথম শোনা যায় এক দার্শনিকের মুখে, ১৮৪৪ সালে। দার্শনিক উইলিয়াম জেমস তাঁর বিশ্ববিখ্যাত গ্রন্থ ‘The Principles of Psychology’-তে একথা বলেন যে মানুষের চেতনা বা consciousness-কে বিচ্ছিন্নভাবে দেখলে তার কিছুই দেখা হয় না, তার প্রকৃত স্বরূপ জানতে গেলে তাকে অবিচ্ছিন্নভাবে জানতে হবে। তাঁর কথা হল— “It is nothing joined, it flows. A river or a ‘Stream’ are the metaphor by which it is most naturally described. In talking of it, let us call it the stream of thought, of consciousness, of subjective life.’’
চেতনাপ্রবাহমূলক উপন্যাসের উদ্ভাবক বলতে সাধারণভাবে জেমস জয়েসের নামই মনে পড়ে আমাদের, কিন্তু এই ধরনের উপন্যাসের প্রথম সচেতন শিল্পী যে হেনরি জেমস, এ বিষয়ে ককোনো সন্দেহ নেই। তিনিই এই আন্দোলনকে জনপ্রিয় করেন এবং এর স্বপক্ষে যাবতীয় যুক্তি বিস্তার করে একে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেন।
চেতনাপ্রবাহমূলক উপন্যাসের বৈশিষ্ট্য
চেতনাপ্রবাহমূলক উপন্যাসের উদ্ভব ও বিস্তার, তার সংজ্ঞা ও স্বরূপের এই আলোচনার প্রেক্ষিতে আমরা এখন এই ধরনের উপন্যাসের বৈশিষ্ট্যগুলি চিহ্নিত করতে পারি—
- বহির্জগৎ নয়, অন্তর্জগতের জটিল টানা-পোড়েন-ই এ জাতীয় উপন্যাসের মনোনিবেশ ও প্রকাশের বিষয়—‘‘a novel that pays great attention to the complicated mental states of its character.’’
- এ জাতীয় উপন্যাসে কোনো আকর্ষণীয় গল্প/কাহিনি, একটি সুসংবদ্ধ প্লট থাকে না। কি ঘটছে তা দেখানো নয়, কেন এবং কি জন্যে ঘটছে, বা চরিত্রের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া দেখানোই এখানে মূল উদ্দেশ্য। কেবলমাত্র সময়ানুক্রমিকভাবে একটি সুষম কাহিনিবিন্যাসে বিভিন্ন চরিত্রের অন্তর্লীন আবেগ-অনুভূতি এখানে ব্যক্ত করা হয় না।
- মানবমনের বহুবিচিত্র ও অসংখ্য চিন্তা ও অনুভবকে, চরিত্রের যে অন্তর্লোক লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকে, তাকে গোচরীভূত করতে লেখক গ্রহণ করেন ‘অন্তরস্থ স্বগতোক্তি’ বা ‘interior monlogue’-এর কৌশল। এই পদ্ধতিতে চিন্তাভাবনাগুলি এলোমেলোভাবে আসে। যুক্তি-পরম্পরা, বাস্তবতার স্তরভেদ, শব্দ প্রয়োগ ও বাক্য গঠনের ব্যাকরণরীতি, এসব ভেঙেচুরে ঔপন্যাসিক মানসপ্রবাহের নিরবচ্ছিন্ন তৎপরতার ছবিটি ভ্যানগগের চিত্রকলার মতোই পরিস্ফুট করেন।
- মূলত, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অন্তর্ভাষণ (direct/indirect interior monologue), সর্বজ্ঞ বা সর্বদর্শীর বিবরণ (omniscient description) এবং স্বগতোক্তি (soliloquy)-র মাধ্যমে ঔপন্যাসিক চেতনার প্রবাহটিকে দেখাবার চেষ্টা করেন। ‘অন্তর্ভাষণ’ চরিত্রের মানসিক বিষয় (psychic content) ও তাকে ব্যক্ত করার প্রক্রিয়াগুলিকে (processes) দেখাবার জন্যে ব্যবহৃত হয়। ‘প্রত্যক্ষ অন্তর্ভাষণ’ চরিত্রের চিন্তা-চেতনার নিরবচ্ছিন্ন প্রবাহকে সরাসরি পাঠকের কাছে তুলে ধরে উত্তম পুরুষে। লেখকের উপস্থিতি বা মধ্যস্থতার প্রয়োজন থাকে না।
- হেনরি জেমস্ ও বের্গস-র দর্শনভাবনা থেকে চেতনাপ্রবাহের শিল্পরীতির উদ্ভব। এই ভাবনা অনুযায়ী চেতনা তরল প্রবাহের মতো গতিশীল ও স্বেচ্ছাচারী; সময়ের প্রচলিত কাঠামোয় তাকে আটকে রাখা যায় না। চেতনাপ্রবাহমূলক উপন্যাসে তাই ‘সময়ানুক্রমিক বিন্যাস’ তথা ‘Chronological Order’ থাকে না। এক স্তর থেকে অন্য স্তরে চেতনা যেমন ছুটে চলে, তেমনি অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যৎ সব এলোমেলোভাবে মিলেমিশে যায় চেতনাপ্রবাহরীতির উপন্যাসে।
- জয়েসের Finnegan’s Wake-এর প্রায় অগম্য জটিল চেতনাপ্রবাহ রীতি এবং রিচার্ডসনের Pilgrimage-এর সহজতর কৌশল ছাড়াও আর এক ধরনের পদ্ধতি লক্ষ করা যায় যাকে বলা হয় ‘Cinematic’ কলারীতি। চলচ্চিত্রে যেমন বিভিন্ন সময়ে তোলা শটগুলিকে আগে পরে, প্রয়োজনে কাটা-ছেড়া করে জুড়ে তোলা হয়, তেমনিভাবে ‘Montage’-এর রীতিতে ঔপন্যাসিক চরিত্রের অন্তর্মুখী বিশ্লেষণ দেখাতে পারেন; অতিক্রম করতে পারেন স্থান ও কালের সীমাবদ্ধতার অন্তরায়; কখনও এগিয়ে, কখনও পেছিয়ে চেতনাপ্রবাহকে দিতে পারেন অনায়াস গতি।
- চেতনাপ্রবাহরীতির উপন্যাসে আমরা পাই এক অসম্ভব কল্পনামণ্ডিত, ছন্দ-লালিত গদ্য। তাতে থাকে এক স্বয়ংক্রিয়তা ও আপাত-অসংলগ্নতা; অনেক সময়ই ছেদ বা যতি চিহ্ন বর্জন করে লেখক অনর্গল চেতনাপ্রবাহকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ধরবার চেষ্টা করে থাকেন।
বাংলা ভাষায় মনস্তত্ত্ব বিশ্লেষণমূলক উপন্যাস রচনার শুরু বঙ্কিমচন্দ্রের রজনী ও কৃষ্ণকান্তের উইল থেকে। বাইরের দৃশ্যমান জগৎ থেকে নায়ক-নায়িকার অন্তর্জগতের দ্বন্দ্ব-সংঘাতের দিকে পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন বঙ্কিম, যদিও শৈলীর নিরিখে এগুলিকে চেতনাপ্রবাহমূলক উপন্যাস বলা যাবে না। সেদিক থেকে অনেকখানি অগ্রসর হয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ তার চোখের বালি, চতুরঙ্গ, এবং ঘরে-বাইরে-তে। ভাষা ও চরিত্র রূপায়ণের অভিনবত্বে চতুরঙ্গ এবং বিমলা-নিখিলেশ-সন্দীপের ত্রিকোণ সম্পর্কের অন্তরচারণায় ঘরে-বাইরে আধুনিক মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাসের স্মরণীয় কীর্তিস্তম্ভ। রবীন্দ্রোত্তর কালের লেখকদের মধ্যে চেতনাপ্রবাহ কলাবিধি অনুসরণে লেখা ধূর্জটিপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ত্রয়ী উপন্যাস, ‘অন্তঃশীলা-আবর্ত-মোহানা’, বুদ্ধদেব বসুর ‘লালমেঘ’, গোপাল হালদারের ‘একদা’ এবং আরও সাম্প্রতিক কালে মতি নন্দীর ‘নক্ষত্রের রাত’ ইত্যাদি উল্লেখনীয়।
একটি সার্থক চেতনাপ্রবাহমূলক উপন্যাস
বাংলায় চেতনাপ্রবাহমূলক উপন্যাসের প্রথম সচেতন প্রয়াস বলে কেউ কেউ মনে করেন ধূর্জটিপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের অন্তঃশীলা’কে, কেউ কেউ মনে করেন বুদ্ধদেব বসুর ‘লালমেঘ’ উপন্যাসকে। এরকম সচেতন প্রয়াস না হয়েও যে প্রায় বিশুদ্ধ চেতনাপ্রবাহমূলক রীতিতে উপন্যাস লেখা সম্ভব, তার শ্রেষ্ঠ উদাহরণ আমরা মনে করি সতীনাথ ভাদুড়ীর লেখা ‘জাগরী’। শ্রেণীগত বিচারে একে মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস বললে আমাদের আপত্তি নেই, কিন্তু রচনাকৌশলের দিক থেকে একে চেতনাপ্রবাহমূলক বলতেই হবে। কী ভাবে লেখা তার সংক্ষিপ্ত আভাস দিলেই কথাটা বোঝা যাবে।
‘জাগরী’ উপন্যাসটি এক রাত্রির কাহিনী, এক ভয়ংকর রাত্রির কাহিনী। পরিবারের বড়ো ছেলে বিলুর ফাসি হবে পরের দিন সকালে, জেলখানায় তার বাবা এবং মা দুজনেই বন্দী। বাবা প্রবীণ কংগ্রেসী কর্মী, জেলে বসে চরকা বুনছেন, মা রয়েছে আওরৎ কিতা’-য়। বিলুর ভাই নীলু, রাজনৈতিক মতাদর্শের পার্থক্যহেতু যে নিজেই ধরিয়ে দিয়েছে দাদাকে, রয়েছে জেলের বাইরে। চারজনেই বিনিদ্র রাত্রিযাপন করছে, এবং চারজনেই একই কথা ভাবছে তাদের ভাবনার অনুষঙ্গে এই পরিবারটির সমগ্র পরিচয় ফুটে উঠছে।
চেতনাপ্রবাহমূলক রীতি পরীক্ষার এত ভালো ক্ষেত্র অন্যান্য অনেক উপন্যাসেই পাওয়া যাবে না। সতীনাথ ভাদড়ী সে সুযোগ পেয়েছেন এবং অত্যন্ত ভালোভাবে তা ব্যবহার করেছেন। মানুষগুলির অনুপুঙ্খ পরিচয় আমরা পাইনি, তাদের কাহিনী নিটোল ভঙ্গিতে প্রথম থেকে বলাও হয়নি। ফ্ল্যাশ ব্যাক বা অতীত প্রেক্ষণের মতো করে কিছু তথ্য দেওয়া হয়েছে, কিন্তু সেই তথ্যও পর্যায়ক্রমে আসেনি, এসেছে মানুষগুলির প্রত্যেকের জবানীতে তাদের চেতনাপ্রক্রিয়ার অবিচ্ছিন্ন খানিকটা সময়ের মধ্যে দিয়ে। উপস্থাপন রীতি হিসাবে এখানে যে চরিত্রকথনমূলক রীতি ব্যবহার করা হয়েছে, অর্থাৎ চারটি চরিত্রই পৃথকভাবে তাদের চেতনাপ্রবাহ তুলে ধরার সুযোগ পেয়েছে, এতেও এই নতুন পদ্ধতি প্রয়োগ সার্থক হতে পেরেছে। এবারে আমরা এই বিশেষ ধরনের প্রয়োগপদ্ধতির যে লক্ষণগুলি উল্লেখ করেছি, সেই সব লক্ষণের ভিত্তিতে উপন্যাসের প্রয়োগ বিষয়ে আলোচনা করতে পারি।
ক) প্রত্যেকটি চরিত্রের মানসিকতা যে ঠিক ঠিক ফুটে উঠতে পেরেছে সেটা কিন্তু তাদের তাৎক্ষণিক বর্ণনার মধ্যে দিয়েই। যেমন বিলুর মনোভঙ্গি অত্যন্ত ভালোভাবে ফুটে ওঠে তার এই জবানীতে—‘‘কিছুক্ষণের মধ্যেই তো চতুর্দিক অন্ধকারে ঢাকিয়া যাইবে। তাহার পর সারা রাত নিঝুমের পালা—তাই বোধহয় শেষ মুহূর্তের এই চঞ্চলতা, এত ডানা ঝটপটানি, এত আনন্দ উৎসব—যতুটুকু আনন্দ সময়ের নিকট হইতে ছিনাইয়া লওয়া যায়। সত্যই কি পাখিগুলি এই জন্য সন্ধ্যার সময় এত চঞ্চল হয়?’’
আপার ডিভিশন ওয়ার্ডে বাবার জবানবন্দীর সামান্য অংশ এবার খুঁটিয়ে দেখা যেতে পারে—‘‘এক সঙ্গে এতগুলি চরখার নানারকম শব্দ শুনিতে ভারি ভালো লাগে। অনেক উঁচু দিয়া যেন এরোপ্লেন উড়িয়া চলিয়া যাইতেছে। মনে পড়াইয়া দেয় যে সোনার ভারত গড়িয়া তুলিবার পথে আমি একলা পথিক নই। ইহা তো কেবল এত গজ এত হাত সুতা কাটা মাত্র নয়। এখন যে চরখার প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা হইয়াছে।’’
মায়ের জবানীটাই পুরো চলিত ভাষায় লিখেছেন লেখক, অত্যন্ত ভালো করেছেন—মায়ের চরিত্রটা ফুটিয়ে তুলতে ভাষাও অনেক সাহায্য করেছে। দৃষ্টান্ত—‘‘আমার ছেলের বিয়ে আমি যেখানে ইচ্ছে দেবো… আমি রাজি হইনি, দুজনকে মানায় না ভালো বলে। হিন্দুস্থানী আর বাঙালীতে কি মানায়? যেখানকার যা সেখানকার তা। এক গাছের বাকল আর এক গাছে এটে দিলে তা কি কখনও জোড়া লাগে। আমি বলবো সরস্বতী, তো ওরা বলবে সরচোয়াতী! সরস্বতী কি শুকতো রাঁধতে জানে? গোকুল পিঠের নাম শুনেছে?
নীলুর নিজস্ব জবানীতেও তার চরিত্রটি চমৎকার ফুটেছে। দাদা প্রসঙ্গে তার মন্তব্য—‘‘যে কথা শুনিয়া রাগে আমার সর্বশরীর জুলিয়া যাইতেছে, হয়তো মৃদু হাসির সহিত ছোটো একটি উত্তর দিয়া, উহা সহ্য করিয়া গেল। একেবারে নীলকণ্ঠ সাহসের অভাব তাহার নাই, ভয় পাইয়া কোন উচিত কাজ ছাড়িয়া দিতে আজ পর্যন্ত তাহাকে দেখি নাই। কিন্তু তাহার রক্ত যেন গরমই হয় না।’’
খ) ‘জাগরী’ উপন্যাসে সমস্ত বর্ণনাই অসংলগ্ন। সামান্য এক-একটা সূত্র ধরে কীভাবে মানসিক চিন্তা অগ্রসর হয় তার উদাহরণ—‘‘কী গাছ জানিনা, তামাটে রঙ-এর পাতা।…গাছটির দিকে তাকাইলেই মনে হইতেছে উহার ভঁটা ভাঙিলেই সাদা ঘন দুধের মতো রস বাহির হইবে। ক্ষেপ পাঁপড়া, তাহাকে আমরা বলি ক্ষীরুই, তাহার রসও ঠিক এইরূপ দেখিতে।…আমি আর নীলু তাহাকে আশ্রমের কাছে গ্যাঞ্জেস-দার্জিলিং রােডের উপর বরারগাছের নিচেয় লইয়া গিয়াছিলাম, কেমন করিয়া রবারের রস জমাইয়া রবার তৈয়ারি করিতে হয় তাহা দেখাইবার জন্য।’’
গ) স্বগত কথনের অনেক দৃষ্টান্ত এ উপন্যাসে আছে, একটি উদ্ধৃতি করি—‘‘নীলু বলিতেছে মার ডানকোলটি তাহার; বা কোল আমার লইতে ইচ্ছা হইলে আমি লইতে পারি। ..মা ঠাস ঠাস করিয়া আমার পিঠে দুই চড় বসাইয়া বলিলেন, ‘বুড়ো ছেলে, লজ্জা করেনা, যত বয়স হচ্ছে তত গুণ বাড়ছে। আমি জবাব দিলাম, ‘আমি সুপারি ফেলেছি নাকি?’ ‘ফের কথা। ছোট ভাই ডান কোল চাচ্ছে, তা ওনার, ডান কোল নিতে হবে। ডান কোল নীলুর।”
ঘ) তির্যক বর্ণনার একটু দৃষ্টান্ত গ্রহণ করি—আমার বুকের উপর দিয়াই যেন লরিখানা চলিয়া গেল—টানিয়া যদি ধরিয়া রাখিতাম—গায়ের জোরে, যত শক্তি আছে আমার শরীরে ককভরা রাস্তার উপর দিয়া আমাকে টানিয়া লইয়া যাইতেছে—লরীর চাকা থামাই, এত জোর কি আমার আছে।
ঙ) একক সংলাপ, অবশ্যই অনুচ্চারিত, এই উপন্যাসে অনেক পাওয়া যায়। একটু অংশ উদ্ধার করা যায়—‘‘সেই নীলু দেবে বিলুর বিরুদ্ধে সাক্ষী! এতো আমি মরে গেলেও বিশ্বাস করতে পারিনা। নীল গোয়ার, নীলু অবুঝ, নীল খামখেয়ালী, সব ঠিক-কিন্তু সে যে দাদা অন্ত প্রাণ। নীলু কি কখনো এমন করতে পারে? সেই দিন থেকে যখনই কথাটা ভাবি আমার বুকের রক্ত হিম হয়ে আসে। যদি খবরটা সত্যি হয়!’’
কাজেই ‘জাগরী’ উপন্যাসে যে চেতনাপ্রবাহরীতির কৌশলের সার্থক ব্যবহার আছে, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
তথ্যসূত্র:
কাব্যজিজ্ঞাসা – অতুলচন্দ্র গুপ্ত | Download |
কাব্যতত্ত্ব: আরিস্টটল – শিশিরকুমার দাস | Download |
কাব্যমীমাংসা – প্রবাসজীবন চৌধুরী | Download |
ভারতীয় কাব্যতত্ত্ব – নরেন বিশ্বাস | Download |
ভারতীয় কাব্যতত্ত্ব – অবন্তীকুমার সান্যাল | Download |
কাব্যজিজ্ঞাসার রূপরেখা – করুণাসিন্ধু দাস | Download |
কাব্য-শ্রী – সুধীরকুমার দাশগুপ্ত | Download |
সাহিত্যের রূপরীতি ও অন্যান্য – কুন্তল চট্টোপাধ্যায় | Download |
সাহিত্য ও সমালোচনার রূপরীতি – উজ্জ্বলকুমার মজুমদার | Download |
কাব্যালোক – সুধীরকুমার দাশগুপ্ত | Download |
কাব্যপ্রকাশ – সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত | Download |
নন্দনতত্ত্ব – সুধীর কুমার নন্দী | Download |
প্রাচীন নাট্যপ্রসঙ্গ – অবন্তীকুমা সান্যাল | Download |
পাশ্চাত্য সাহিত্যতত্ত্ব ও সাহিত্যভাবনা – নবেন্দু সেন | Download |
সাহিত্য প্রকরণ – হীরেণ চট্টোপাধ্যায় | Download |
সাহিত্য জিজ্ঞাসা: বস্তুবাদী বিচার – অজয়কুমার ঘোষ | Download |
Leave a Reply