চৌপদী কাকে বলে? এর বৈশিষ্ট্যগুলি উদাহরণসহ আলোচনা কর।
চৌপদী
যে ছন্দে চারটি পদের সহযোগে চরণ গঠিত হয় তাকেই চৌপদী বলে। চৌপদীতে দুটি পরস্পর মিত্রাক্ষর চরণ ও প্রতি চরণে চারটি পদ থাকে। অন্যভাবে বলা যায় তিনটি অর্ধযতি দ্বারা খণ্ডিত চারটি পর্ব বা পদ যুক্ত চরণের কবিতাকে চৌপদী বলা হয়। প্রাচীন ও মধ্যযুগে ত্রিপদী ও চৌপদীতে প্রতিটি পর্ব পদ রূপে ব্যবহৃত হত। চারটি পদের মধ্যে ১ম ২য়, অথবা ১ম-২য়-৩য় চরণে অন্ত্যমিল থাকে। ৪র্থ পদটি পরবর্তী পদের সঙ্গে সমিল হয়।
চৌপদীর শ্রেণিবিভাগ
চৌপদী দু-প্রকার— লঘু চৌপদী ও দীর্ঘ চৌপদী।
লঘু চৌপদী
লঘু চৌপদীতে প্রথম তিনটি পদেই অন্ত্যমিল থাকে। তিনটি ছন্দেই লঘু চৌপদী হতে পারে।
(১) চির সুখী জন ভ্রমে কি কখন | ব্যথিত বেদন | বুঝিতে পারে
কি যাতনা বিষে | বুঝিবে সে কিসে | কভু আশি বিষে দংশেনি যারে। ৬+৬+৬+৫
(২) দিবা যেন আললাহীনা | এই দুটি কথা বিনা।
‘তুমি ভালো আছে কিনা। আমি ভাল আছি।
স্নেহ যেন নাম ডেকে। কাছে এসে যায় দেখে,
দুটি কথা দূর থেকে। করে কাছাকাছি। ৮+৮+৮+৬
(৩) খোকা মাকে। সুধায় ডেকে ৪+৪
এলেম আমি। কোথা থেকে। ৪+৪
কোনখানে তুই । কুড়িয়ে পেলি ৪+৪
আমারে। ৩
দীর্ঘ চৌপদী
এই ছন্দে পদের আয়তন দীর্ঘ হয়।
(১) সবুজ নেশায়। ভোর করেছিস। ধরা। ৪+৪+২
ঝড়ের মেঘে | তোরই তড়িৎ | ভরা । ৪+৪+২
বসন্তেরে। পরম আকুল | করা । ৪+৪+২
আপন গলার। বকুল মাল্য। গাঁথা। ৪+৪+২
(২) পরের পরে কেন এ রোষ; ১০
নিজেরাই যদি শত্রু হোস্? I ১০
তোদের এ যে নিজেরই দোষ—। ১০
আবার তোরা মানুষ হ—। ১০
(৩) প্রভাতসূর্য। এসেছ রুদ্র সাজে, ১৪
দুঃখের পথে | তোমার তুর্ষ। ১৪
বাজে, অরুণ-বহ্নি | জ্বালাও চিত্ত | মাঝে, ১৪
মৃত্যুর হোক। লয়। ৮
(৪) রক্ত আলোর | মদে মাতাল। ভোরে, ১০
আজকে যে যা বলে বলুক | তোরে,। ১০
সকল তর্ক। হেলায় তুচ্ছ । করে । ১০
পুচ্ছটি তোর | উচ্চে তুলে | নাচা।। ১০
Leave a Reply