//
//

নাট্যশালার ইতিহাসে থেসপিয়ান টেম্পলের অবদান আলোচনা কর।

থেসপিয়ান টেম্পল

(১৯১৫-১৬)

বেঙ্গল থিয়েটারের বাড়িতে থেসপিয়ান টেম্পল থিয়েটার প্রতিষ্ঠা করেন ক্ষেত্রমোহন মিত্র। তিনি স্টার থিয়েটারের অভিনেতা ছিলেন। গ্রান্ড ন্যাশনাল থিয়েটার বন্ধ হয়ে গেলে ক্ষেত্রমোহন সেখানে লেসী ও ম্যানেজার হন। ১৯১৫-এর ৭ আগস্ট নরমহল (হরিমোহন মুখোপাধ্যায়) নাটক দিয়ে এই থিয়েটারের উদ্বোধন হয়। এখানে নাট্যদলের শিল্পীরা হলেন ক্ষেত্রমোহন মিত্র, যোগেশচন্দ্র চৌধুরী, মণীন্দ্রনাথ মণ্ডল (মন্টুবাবু), ঠাকুরদাস চট্টোপাধ্যায়, রামকালী বন্দ্যোপাধ্যায়, পূর্ণ ঘোষ, তিনকড়ি, হরিসুন্দরী (ব্লাকী) প্রভৃতি।

এর আগের গ্রান্ড ন্যাশনাল থিয়েটারে অভিনীত বেশিরভাগ নাটকই এখানে অভিনীত হয়। এবং সেই গতানুগতিক ঐতিহাসিক-পৌরাণিক-সামাজিক নাটক ও গীতিনাট্য প্রহসনের অভিনয় চলতে থাকে। বছরখানেক স্থায়ী এই মঞ্চে এই ধরনের প্রায় পঞ্চাশটি নাটকের অভিনয় হয়।

উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে রবীন্দ্রনাথের রাজা ও রাণী, নারায়ণ বসুর হামীর, হরিপদ মুখোপাধ্যায়ের রাণী দুর্গাবতী, রামলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের রমা (হেনরি উড-এর ‘ইস্টলিন’-এর নাট্যরূপ), পলাশীর যুদ্ধ, আলিবাবা, জয়দেব (হরিপদ চট্টোপাধ্যায়), উভয় সঙ্কট (রামনারায়ণ), দুর্গেশনন্দিনী ও বিষবৃক্ষের নাট্যরূপ, ক্ষীরোদপ্রসাদের চাঁদবিবি, গিরিশের আলাদীন, বিশ্বমঙ্গল, দক্ষযজ্ঞ, মেঘনাদবধের নাট্যরূপ, রামকালী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাজীরাও এখানে অভিনীত হয়।

১৯১৬ খ্রিস্টাব্দের ১৬ এপ্রিল এই থিয়েটারে শেষ অভিনয় হয়। গতানুগতিক ধারায় বহু অভিনীত পুরনো নাটকের অভিনয় এখানে হয়েছিল। নতুন নাটক, নাট্যকার বা নতুন অভিনয় ধারা সৃষ্টি করার মতো কোনোরকম উদ্যোগ বা প্রচেষ্টা এই থিয়েটারে লক্ষ করা যায় না। বরং দর্শক বাড়াবার জন্য এখানে টিকিটের দাম কমিয়ে অর্ধেক করা হয়। তখনকার অন্য অনেক থিয়েটারের মতো ‘বায়স্কোপ’ দেখাবার ব্যবস্থা করা হয়। তবে এই থেসপিয়ান টেম্পলেই পরবর্তীকালের খ্যাতিমান নাট্যকার ও অভিনেতা যোগেশচন্দ্র চৌধুরী প্রথম মঞ্চাবতরণ করেন। রামলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘রমা’ নাটকে সেনাপতির চরিত্রে সাধারণ রঙ্গালয়ে তাঁর প্রথম অভিনয়।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!