//
//

বাংলা রঙ্গমঞ্চের ইতিহাসে ন্যাশনাল থিয়েটারের অবদান আলোচনা কর।

ন্যাশনাল থিয়েটার

(১৯০৫-১০)

বেঙ্গলমঞ্চে প্রতিষ্ঠিত আরেকটি থিয়েটার হলো ‘ন্যাশনাল থিয়েটার’। ১৮৭২-এ প্রতিষ্ঠিত গৌরবময় ন্যাশনাল থিয়েটারের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। শুধু নামটুকু ছাড়া। বেঙ্গল মঞ্চ থেকে অরোরা ও ইউনিক থিয়েটার উঠে গেলে সেখানকারই শিল্পীরা এক হয়ে এই থিয়েটার গড়ে তোলেন। ইউনিকের ম্যানেজার সতীশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রইলেন ম্যানেজার। উদ্বোধন হল ১৯০৫-এর ২ ডিসেম্বর। অভিনীত হলো রামলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘অদৃষ্ট’ নাটক। উল্লেখযোগ্য শিল্পীরা হলেন—তিনকড়ি, সুকুমারী, কুসুমকুমারী, তারাসুন্দরী, মানদাসুন্দরী, সতীশ চট্টোপাধ্যায়, শরৎ চট্টোপাধ্যায়, অক্ষয় চক্রবর্তী, প্রবোধচন্দ্র ঘোষ, চুনীলালদেব, মনোমোহন গোস্বামী প্রমুখ।

এখানে নতুন ও পুরনো অনেক নাটক অভিনীত হয়েছিল। গিরিশের সীতার বনবাস, বিল্বমঙ্গল, নলদময়ন্তী, জনা, অমৃতলালের তরুবালা, ক্ষীরোদপ্রসাদের আলিবাবা প্রভৃতি পুরনো নাটকের সঙ্গে সঙ্গে মনোমোহন গোস্বামীর পৃথিরাজ, সংসার, ছত্রপতি শিবাজী, মনোমোহন রায়ের রিজিয়া, হরিসাধন মুখোপাধ্যায়ের ‘বঙ্গবিজয়’ প্রভৃতি নতুন নাটকও অভিনীত হয়।

১৯০৬-এর পর ম্যানেজার যখন জহরলাল ধর এবং পরে এন. সি. মল্লিক, তখন থেকেই এই ন্যাশনাল থিয়েটারে উপহার-প্রথা চালু হয়। টিকিটের দাম কমিয়ে, লাউ, কুমড়ো, কয়লা, ছাতা, গ্রন্থ উপহার দিয়েও ‘ন্যাশনাল থিয়েটার’ সেই সময়ের স্টার, মিনার্ভা, কোহিনুরের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় হেরে অভিনয় বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়। মজার মজার উপহার দিয়ে দর্শক-আকর্ষণের হাস্যকর প্রচেষ্টার জন্য এই ন্যাশনাল থিয়েটার আলোচিত হয়। ১৯১০-এর ১৭ ডিসেম্বর এখানে শেষ অভিনয় হয়।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!