প্রবহমান পয়ার কাকে বলে? এর বৈশিষ্ট্য উদাহরণসহ আলোচনা কর।
প্রবহমান পয়ার ও মহাপয়ার
যে পয়ারে ও মহাপয়ারে কবির ভাব কল্পনা চরণ সীমায় শেষ না হয়ে পরবর্তী চরণে বা চরণসমূহে প্রবাহিত হয়ে চলে, সাধারণভাবে তাকেই প্রবহমান পয়ার ও মহাপয়ার বলে।
প্রবহমান পয়ার ও মহাপয়ারের বৈশিষ্ট্য
প্রবহমান পয়ার ও মহাপয়ারের এর বৈশিষ্ট্য গুলি হল—
- প্রবহমান পয়ারের ক্ষেত্রে প্রতি চরণে ১৪ টি মাত্রা থাকে। প্রতি পর্ব ৮+৬ মাত্রায় বিভক্ত হয়।
- চরণের শেষে ভাবের সমাপ্তি না ঘটে পরবর্তী চরণে প্রবাহিত হয়ে চলে।
- ছেদের স্বাধীনতা প্রবহমান পয়ারের প্রধান বৈশিষ্ট্য।
- প্রবহমান মহাপয়ারে প্রতি চরণে ১৮ মাত্রা (প্রতি চরণ ৮+১০ মাত্রায় বিভক্ত হয়।)
- এ ক্ষেত্রে চরণান্তিক মিল থাকতেও পারে নাও থাকতে পারে। অর্থাৎ চরণান্তে মিল বা অমিল উভয়ই হতে পারে।
উদাহরণ
সমিল প্রবহমান পয়ার
কবিবর, কবে কোন্ । বিস্মৃত বরষে ৮+৬
কোন্ পুণ্য আষাঢ়ের | প্রথম দিবসে ৮+৬
লিখেছিলে মেঘদূত | মেঘমন্দ্র শ্লোক। ৮+৬
বিশ্বের বিরহী যত | আপনার শোক। ৮+৬
রাখিয়াছে…। ৮+৬
অমিল প্রবহমান পয়ার
হেন চিত্ত বিনোদন। বৈতালিক গীতে। ৮+৬
খোলে আঁখি? শিখীসহ । শিখিনী সুখিনী ৮+৬
নাচিত দুয়ারে মোর! | নর্তক নর্তকী ৮+৬
এ দোঁহার সম, রামা । আছে কি জগতে? ৮+৬
সমিল প্রবহমান মহাপয়ার
আজ আসিয়াছে কাছে ১০
জন্মদিন মৃত্যুদিন;/ একাসনে দোঁহে বসিয়াছে; ৮+১০
দুই আলো মুখোমুখি/মিলিছে, জীবন প্রান্তে মম ৮+১০
রজনীর চন্দ্র আর প্রত্যুষের শুকতারা সম—৮+১০
একমাত্র দোঁহে অভ্যর্থনা। ১০
Leave a Reply