মনসামঙ্গল কাব্যধারায় বিষ্ণু পালের কৃতিত্ব আলোচনা কর।

বিষ্ণু পাল

রাঢ় অঞ্চলের অষ্টাদশ শতাব্দীর মনসামঙ্গলের বিশিষ্ট কবি বিষ্ণু পাল। বর্ধমানের পশ্চিমাঞ্চলের এবং দঃ পূঃ বীরভূমে বিষ্ণু পালের পুঁথি পাওয়া গেছে। কবি জাতিতে কুম্ভকার ও এই অঞ্চলেরই বাসিন্দা ছিলেন। কবি রাম উপাসক ছিলেন।

কাব্যের আরম্ভে ধর্ম-ঠাকুরের পুরাণ অনুযায়ী সৃষ্টিবর্ণনা বর্ণিত হয়েছে। আবার চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের অনুসরণে বিষ্ণু পাল তাঁর কাব্যকে আটটি পালায় বিভক্ত করেছেন। এজন্য এই কাব্যকে অষ্টমঙ্গলাও বলা হয়।

কবির সমাজবোধ ছিল যথেষ্ট। যেমন, মনসার পূজা মর্ত্যে প্রচার করার জন্য বেহুলারূপে জন্মগ্রহণ করার পূর্বে উষা মনসাকে দিয়ে তিনটি সত্য করিয়ে নিয়েছেন—

গোহত্যা ব্রহ্মহত্যা সুরাপান করে।

তোমা (তুমি) না তরাল্যে, বাছা, সেই পাপ ধরে।।

শুদ্র না হইঞা যেবা নীল বস্ত্র পরে।

তোমা না তরাল্যে, বাছা, সেই পাপ ধরে।।

কুইলা বলদ যেবা রাখয়ে গোহালে।

তোমা না তরাল্যে, বাছা, সেই পাপ ধরে।।

অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ও লিখেছেন— “বিষ্ণু পালের মনসামঙ্গল নিতান্তই গ্রাম্য মন ও গ্রাম্য পরিবেশের জন্য রচিত হইয়াছিল। …তবে কাহিনি গ্ৰন্থনে ও বাস্তবতা সঞ্চারে তাঁর কৃতিত্ব উপেক্ষা করিবার মতো নহে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!