ব্যাজস্তুতি অলংকারের সংজ্ঞাসহ উদাহরণ দাও।
ব্যাজস্তুতি
‘ব্যাজ’ শব্দের অর্থ কপট বা ছল। সুতরাং ‘ব্যাজস্তুতি’র অর্থ কপটস্তুতি। অর্থাৎ উপরে উপরে স্তুতি, আসলে স্তুতি নয়। গূঢ়ার্থ-প্রতীতিমূলক এই অলংকারের সংজ্ঞা এই অর্থেরই কিছুটা বিস্তার আছে মাত্র। এর সংজ্ঞা দেওয়া যায় এভাবে— নিন্দার ছলে স্তুতি কিম্বা স্তুতির ছলে নিন্দা করা হলে তাকে ব্যাজস্তুতি অলংকার বলে।
স্তুতির ছলে নিন্দা
উদাহরণ:
কি সুন্দর মালা আজি পরিয়াছ গলে,
প্রচেতঃ।।
ব্যাখ্যা: এই উক্তি রাবণের। লঙ্কাপুরীর চারিদিকের সমুদ্রকে দেখে এই সম্বোধন করেছে রাবণ। অ-বন্ধনা সিন্ধু আজ রামচন্দ্রের দ্বারা স-বন্ধনা হয়েছে। অর্থাৎ রামচন্দ্র অলঙ্ঘ্য অজেয় সমুদ্রের সেতুবন্ধনে সক্ষম হয়েছে। রাবণ তাই সমুদ্রকে ধিক্কার দিয়েছে। তার এই উক্তি আসলে নিন্দামূলক। ‘সুন্দর মালা’র গূঢ়ার্থ হল ‘কুৎসিত ফাঁস’। তাই এটি ব্যাজস্তুতি অলংকার হয়েছে।
নিন্দাছলে নিন্দা
উদাহরণ:
অতিবড়ো বৃদ্ধপতি সিদ্ধিতে নিপুণ।
কোনো গুণ নাই তার কপালে আগুন।।
ব্যাখ্যা: ভারতচন্দ্র শিব সম্পর্কে অন্নপূর্ণা দুর্গার এই নিন্দাবাদ আসলে প্রকৃতপক্ষে নিন্দার ছলে স্তুতি। অন্নপূর্ণা বলেছেন তার স্বামী শিব দেবজ্যেষ্ঠ, তিনি মুক্তিসাধনায় সর্বোত্তম। তিনি নির্গুণ, কপালে তার (তৃতীয় নয়ন) আগুন।
Leave a Reply