//
//

শ্লেষ কাকে বলে? এর সংজ্ঞাসহ শ্রেণিবিভাগ কর।

শ্লেষ

যখন একটি শব্দ একবার মাত্র ব্যবহার হয় অথচ ভিন্ন ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করে, তখন তাকে শ্লেষ বলে।

উদাহরণ:

বাজে পূরবীর ছন্দে রবির শেষ রাগিনীর বীণ।

ব্যাখ্যা: এখানে ‘পূরবী’ ও ‘রবি’ শব্দদুটি মাত্র ১ বার ব্যবহৃত হয়েছে কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করেছে। যেমন ‘পূরবী’ শব্দের দুটি অর্থ—গোধূলির রাগ, পূরবী কাব্যগ্রন্থ। আবার ‘রবি’ শব্দের দুটি অর্থ—সূর্য, কবি রবীন্দ্রনাথ। প্রথম অর্থ ধরলে বাক্যটির অর্থ দাঁড়ায়—সূর্যাস্তের সময় বীণাসঙ্গীত পূরবীর ছন্দে বাজে। দ্বিতীয় অর্থ ধরলে বাক্যটির অর্থ দাঁড়ায়— রবীন্দ্রনাথ শেষ জীবনে পূরবী কাব্যগ্রন্থ রচনা করেছিলেন।

শ্লেষের শ্রেণিবিভাগ

শ্লেষ দুই প্রকার— অভঙ্গ শ্লেষ এবং সভঙ্গ শ্লেষ।

অভঙ্গ শ্লেষ

যে শব্দে শ্লেষ অলংকার হয় তাকে না ভেঙেই যদি দুটি অর্থ পাওয়া যায় তখন তাকে অভঙ্গ শ্লেষ বলে।

উদাহরণ:

পূজাশেষে কুমারী বলল, ঠাকুর

আমাকে একটি মনের মতো বর দাও।

ব্যাখ্যা: এখানে বর শব্দের দুটি অর্থ-আশীর্বাদ, স্বামী। প্রথম অর্থ ধরলে বাক্যটির অর্থ দাঁড়ায়, আমাকে মনের মতো আশীর্বাদ করো। দ্বিতীয় অর্থ ধরলে দাঁড়ায়, আমাকে মনের মতো একটি স্বামী দাও। যেহেতু বর শব্দটিকে না ভেঙেই দুটি অর্থ পাওয়া গেছে তাই এটি অভঙ্গ শ্লেষ।

সভঙ্গ শ্লেষ

কোনো শব্দকে না ভেঙে যদি একটি অর্থ পাওয়া যায় এবং ভেঙে যদি অন্য অর্থ পাওয়া যায় তখন তাকে সভঙ্গ শ্লেষ বলে।

উদাহরণ:

অপরূপ রূপ কেশবে

দেখরে তোরা এমনধারা কালো রূপ কি আছে ভবে।

ব্যাখ্যা: এখানে ‘কেশব’ শব্দটির দুটি অর্থ পাওয়া যাচ্ছে। কেশব শব্দটিকে না ভেঙে এর মানে দাঁড়ায় শ্রীকৃষ্ণ। কেশব শব্দটিকে ভাঙলে দাঁড়ায়, কে-শবে অর্থাৎ কে শবের উপর দণ্ডায়মান? এর উত্তর হচ্ছে কালী। সুতরাং ‘কেশব’ শব্দটিকে না ভেঙে এবং ভেঙে ভিন্ন ভিন্ন অর্থ পাওয়ায় এটি সভঙ্গ শ্লেষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!