//
//

আধুনিক কবিতায় স্বর্ণকুমারী দেবীর অবদান আলোচনা কর।

স্বর্ণকুমারী দেবী

ঊনবিংশ শতাব্দীর মহিলা গীতিকবিদের মধ্যে স্বর্ণকুমারী দেবী (১৮৫৫-১৯৩২) সমধিক প্রসিদ্ধ। তিনি যে কাব্যগ্রন্থগুলি রচনা করেছিলেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘গাথা’ শীর্ষক কাব্যগ্রন্থ। ‘গাথা’ কাব্যগ্রন্থটি তিনি উপহার দিয়েছিলেন ছোটভাই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে, কাব্যগ্রন্থের উপহার পৃষ্ঠায় লেখা ছিল—

ছোট ভাইটি আমার,

যতনে গাথা হার কাহারে পরাব আর?

স্নেহের রবিটি, তোরে আয়রে পরাই,

যেন রে খেলার ভুলে ছিঁড়িয়ে ফেলোনা খুলে,

দুরন্ত ভাইটি তুই-তাইতে ডরাই।

স্বর্ণকুমারী দেবী দেশাত্মবোধক কবিতা রচনা করেছিলেন, যার মধ্যে গীতিকাব্যের সুর বর্তমান। সমর সঙ্গীত, রণসঙ্গীত সার্থক দেশাত্মবোধক কবিতা। স্বর্ণকুমারী দেবী চারটি প্রণয় কাহিনিমূলক গাথাকাব্য রচনা করেন—‘সাধের-ভাসান’, ‘সাশ্রু সম্প্রদান’, ‘খড়্গ-পরিণয়’ ও ‘অভাগিনী’।

‘অভাগিনী’ একটি রোমান্টিক প্রেমের কাব্য। বিপিন এ কাব্যের নায়ক, স্ত্রী দামিনীকে সে খুব ভালোবাসতো। তার ইচ্ছে ছিল স্ত্রীকে স্বর্ণালঙ্কারে ভরিয়ে দিতে এই লক্ষ্যপূরণের জন্য অর্থের প্রয়োজনে সে চলে গেল প্রবাসে। দামিনী স্বামী বিরহে দিন কাটাতে থাকে। তারপর এক চিঠিতে জানতে পেলো বিপিনের আসার খবর, আনন্দে তার বুক ভরে গেল।এরপর সে খবর পেলো বিপিনের নৌকা সমুদ্রে ডুবে গিয়েছে। এই খবর শুনে স্ত্রী দামিনী জ্ঞান হারালো। এরপর বিপিন যখন এলো তখন তার অন্তিম অবস্থা, বিপিনের কোলে মাথা রেখে সে অন্তিম নিদ্রায় শায়িত হল। ভাবে ও ভাষায় স্বর্ণকুমারীর এই গাথাকাব্যটি শিল্পোৎকর্ষের পরিচয় বহন করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!