অলংকারের সংজ্ঞা ও শ্রেণিবিভাগ আলোচনা কর।
অলংকার
সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে অলংকার শব্দের দুটি অর্থ। একটি হল সৌন্দর্য। অন্যটি, যা ভূষিত করে, সুন্দর করে, শোভা বর্ধণ করে ইত্যাদি। এই দ্বিতীয় অর্থেই অলংকার শব্দটির ব্যবহার। মানব-মানবীকে সুন্দর করে বলে হার, চুরি, কঙ্কণ, কেয়ুর ইত্যাদির নাম অলংকার। কোন বিশেষ ব্যক্তি কোন সভায় এলে বলা হয় তিনি সভা বা আসন অলঙ্কৃত করলেন। আবার মধুসূদন বলেছেন কৃত্তিবাস সম্পর্কে— ‘এ বঙ্গের অলংকার’। এ সব ক্ষেত্রেই ভূষণ, সৌন্দর্য, শোভা অর্থেই অলংকার শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যও সুন্দর করে সেজে উঠতে পারে। তাকে বিশেষ যত্ন নিয়ে সাজাতে হয়। কখনো তা শব্দের বারংবার ব্যবহারে সুন্দর হয়। কখনো বা অর্থের মাধুর্যে সুন্দর হয়। আর তখনি তা অলংকারে ভূষিত হয়। ভাষা ও সাহিত্যের অলংকারের নানা ভাগ ও নাম। যেমন— অনুপ্রাস, উপমা, রূপক, উৎপ্রেক্ষা ইত্যাদি।
অলংকার শব্দ সাধারণত ব্যাপক অর্থেই প্রযুক্ত। যা অন্য কোনো কিছুকে সুন্দর করে বা ভূষিত করে বা সজ্জিত করে, এমন উপাদানকে বলা হয় অলংকার। কিন্তু, কাব্যের বা ভাষার ক্ষেত্রে অলংকার কিছুটা ক্ষুদ্রার্থে ব্যবহৃত হয়। এ ক্ষেত্রে সৌন্দর্যের উপাদান ভাষিক। অর্থাৎ ভাষার বিশেষ ধরনের ব্যবহারেই গড়ে ওঠে। ভাষার সৌন্দর্য, তার ভূষণ। যার ফলে ভাষা হয় শ্রুতিমধুর, মনোহারী। সাধারণ হয়ে ওঠে অসাধারণ। কাজেই অলংকারের সংজ্ঞা দেওয়া যায়, এইভাবে—“যে ভাষিক উপাদান বাক্যের ধ্বনি বা অর্থকে কিংবা উভয়কেই চারুত্ব দেয়, অর্থাৎ বাক্যকে সজ্জিত, ভূষিত, সৌন্দর্যমন্ডিত করে তাকে মনোহারি করে তোলে, তাকে অলংকার বলে।”
অলংকারের শ্রেণিবিভাগ
অলংকারকে দুইভাগে ভাগ করা যায়— শব্দালংকার এবং অর্থালংকার।
Leave a Reply