বাংলা কবিতায় গিরীন্দ্রমোহিনী দাসীর অবদান আলোচনা কর।
গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী
গ্রাম্যজীবনের পরিবেশ, গ্রাম্যপ্রকৃতি, বাল্যস্মৃতি প্রভৃতি অবলম্বনে কাব্য রচনায় গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী (১৮৫৮-১৯২৪) বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেছিলেন। ‘কবিতাহার’, ‘ভারতকুসুম’, ‘অশ্রুকণা’, ‘আভাস’, ‘শিখা’, ‘অর্ঘ্য’, ‘স্বদেশিনী’, ‘সিন্ধুগাথা’ প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থ এবং ‘সন্ন্যাসিনী বা মীরাবাঈ’ নামক নাট্যকাব্য তাঁর রচিত। তাঁর রচনায় রসদৃষ্টি, লিপিকশলতা প্রভৃতি বৈশিষ্ট্যের পরিচয় পাওয়া যায়। নিরাভরণ বর্ণনাভঙ্গির পরিচয় তাঁর কাব্যে যে সার্থকতার সঙ্গে প্রকাশ পেয়েছে তা সমসাময়িক মহিলা কবিদের মধ্যে অনুপস্থিত। তিনি ‘জাহবী’ নামে একটি মাসিক সাহিত্যপত্রের সম্পাদনা করেছিলেন। স্বামীর মৃত্যুজনিত বেদনাবোধ তাঁর কাব্যরচনার মূলে প্রভাব সঞ্চার করেছিল। খামের বালিকা হয়ে বাঙালির গৃহলক্ষ্মীর ভূমিকায় প্রতিষ্ঠিত থেকে তিনি কাব্য সাধনা করেছিলেন। তাঁর আবেগের কেন্দ্রস্থল ছিল প্রধানত তাঁর স্বামী। সে আবেগ নারীসুলভ অন্তরঙ্গতায় নিবিড় হয়ে আছে তাঁর স্বভাব-কবিত্বে সুন্দর পংক্তিতে—
তুমি কি গিয়াছ চলে? না না, তা ত নয়।
য’দিন বাচিব আমি, ত’দিন জীবিত তুমি,
আমার জীবন যে গো শুধু তোমা-ময়।
Leave a Reply