রঙ্গমঞ্চের ইতিহাসে নরোত্তম পালের নাট্যশালার অবদান আলোচনা কর।

চুঁচুড়ার নরোত্তম পালের বাড়ির নাট্যশালা

কলকাতার অদূরে হুগলী জেলার চুঁচুড়া শহরে নরোত্তম পালের বাড়িতে ‘কুলীনকুলসর্বস্ব’ নাটকের অভিনয়ের ব্যবস্থা হয়। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের ৩ জুলাই, নরোত্তম পালের পুত্র শ্রীনাথ পালের উদ্যোগে এই অভিনয় হয়। তাকে সাহায্য করেন প্রবোধচন্দ্র মণ্ডল। ‘সংবাদ প্রভাকরে’র বিবরণ থেকে জানা যায় যে, ৫ জুলাই, রবিবার এই নাটকের দ্বিতীয় বার অভিনয়ের ব্যবস্থা হয়েছিল। প্রসিদ্ধ গায়ক ও সঙ্গীতকার রূপচাঁদ পক্ষী এই নাটকের অভিনয়ের জন্য গান রচনা করে অভিনেতাদের তালিম দিয়েছিলেন। তাঁর গান—“অধিনীরে গুণমণি পড়েছে কি মনে হে’—নটীর কণ্ঠে খুবই জয়প্রিয় হয়েছিল। প্রথম অভিনয়ে প্রায় নয়শো দর্শক উপস্থিত ছিল। চুঁচুড়া শহরের গঙ্গার অপর পারে ভাটপাড়া ছিল কুলীন ব্রাহ্মণদের পীঠস্থান। নরোত্তম পালের বাড়ির ‘কুলীনকুলসর্বস্ব’ নাটকের অভিনয়ে ভাটপাড়া থেকে অনেক কুলীন ব্রাহ্মণ নৌকাযোগে গঙ্গা পেরিয়ে এপারে এসে উপস্থিত হন। তারা তাদের অপমানকর এই ধরনের নাটক অভিনয়ের বিরোধিতা করেন। তা নিয়ে গোলযোগ হয়। কিন্তু শেষ অবধি অভিনয় সম্পন্ন হয়েছিল। মনে রাখতে হবে, নাটকের বিরোধিতায় থিয়েটারে সামাজিক আন্দোলন এখান থেকেই শুরু হলো। এবং এই নাটকের রচয়িতা রামনারায়ণ নিজেই ছিলেন ভাটপাড়ার নিকটবর্তী গ্রামের ব্রাহ্মণ কুলীন বংশের সন্তান। নাট্যকার রামনারায়ণ প্রসঙ্গে এটিও উল্লেখযোগ্য কথা।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!