ব্যতিরেক অলংকারের শ্রেণিবিভাগসহ প্রতিটি ভাগের বর্ণনা দাও
ব্যতিরেক
ব্যতিরেক শব্দের অর্থ অতিক্রান্তি বা অতিরেক। একটি বস্তু যদি কোন বিষয়ে অপর বস্তুকে ছাড়িয়ে যায়, তখন বলা যায় অতিক্রান্তি ঘটেছে। এদিক থেকে একটি বিশেষ ধরনের সাদৃশ্যমূলক অলংকারের নাম ব্যতিরেক। এর সংজ্ঞা হল—যে সাদৃশ্যমূলক অলংকারে উপমেয়কে উপমান অপেক্ষা উৎকৃষ্ট বা নিকৃষ্ট হিসেবে দেখানো হয়, তাকে ব্যতিরেক অলংকার বলে।
উদাহরণ:
বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি,
তাই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর।
ব্যাখ্যা: এখানে উপমেয় ‘বাংলার মুখ’কে উপমান ‘পৃথিবীর রূপ’-এর তুলনায় উৎকৃষ্ট করে দেখানো হয়েছে। তাই এটি ব্যতিরেক অলংকার হয়েছে।
ব্যতিরেকের শ্রেণিবিভাগ
ব্যতিরেক অলংকার দুই প্রকার— উৎকৰ্ষাত্মক ব্যতিরেক এবং অপকৰ্ষাত্মক ব্যতিরেক
উৎকর্ষাত্মক ব্যতিরেক
যে ব্যতিরেক অলংকারে উপমেয় উপমান অপেক্ষা উৎকৃষ্ট বিবেচ্য হয় তা উৎকৰ্ষাত্মক ব্যতিরেক।
উদাহরণ:
তরল তব সজল দিঠি মেঘের চেয়ে কালো।
ব্যাখ্যা: উপমেয়— ‘দিঠি’ (দৃষ্টি), উপমান— ‘মেঘ’। দিঠি মেঘের চেয়ে কালো। দৃষ্টির ক্ষেত্রে ‘কালো’ উৎকর্ষবাচক।
অপকৰ্ষাত্মক ব্যতিরেক
যে ব্যতিরেক অলংকারে উপমেয়কে উপমানের চেয়ে নিকৃষ্ট (অপকর্ষ) হিসেবে দেখানো হয়, তাকে অপকর্ষাত্মক ব্যতিরেক অলংকার বলে।
উদাহরণ:
এ পুরীর মাঝখানে যত আছে শিলা,
কঠিন শ্যামার মতো কেহনাহি আর।
ব্যাখ্যা: উপমেয়— ‘শ্যামা’, উপমান— ‘শিলা। শ্যামা শীলার চেয়ে কঠিন— এ কথায় উপমেয়র অপকর্ষই প্রকট। কারণ, কাঠিন্য (নিষ্ঠুরতা) দোষবিশেষ।
Leave a Reply